বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের হাতে শারমিন রীমা নামে এক নারী সাংবাদিক হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী চট্টগ্রামের অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিভয়েস২৪.কমের নিজস্ব প্রতিবেদক। তার দাবি, একটি প্রতিবেদনের জন্য মন্তব্য নিতে গেলে বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিমের রোষানলে পড়েন তিনি। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষা বোর্ডের তৃতীয় তলায় চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী শারমিন রিমা জানান, প্রাপ্যতাবিহীন সাড়ে ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে সোমবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনি চেয়ারম্যানের কক্ষে অপেক্ষা করেন। প্রায় ১০ মিনিট অপেক্ষার পর তিনি একজনকে তার কাছে পাঠান। ওই লোক এসে বলেন, ‘স্যার ফোনে কথা বলছেন, আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। সময় লাগবে একটু।’ জবাবে তিনি অপেক্ষা করবেন বলে জানান।
শারমিন রিমা বলেন, বিকেল ৩টার দিকে রেজাউল স্যার ভেতরের আরেকটি রুম থেকে বের হয়েই আমার কোনো কথা না শুনে রাগান্বিত হয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ শুরু করেন। এসময় তিনি বলতে থাকেন, ‘আপনি কার পেইড অ্যাজেন্ট হয়ে এসেছেন? আমার চরিত্র হনন করতে এসেছেন। আপনার সঙ্গে আমি কথা বলব না। এই মুহূর্তে আপনি রুম থেকে বের হয়ে যান’। এই বলে তিনি কয়েকজন কর্মচারীকে ডেকে আমাকে রুম থেকে বের করে দিতে বলেন। তখন আমি পাল্টা প্রশ্ন করি, ‘কেন আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন’।
তিনি আরও বলেন, আরও কয়েকজন কর্মচারীকে ডেকে সেখানে কর্মরত আনসার সদস্যদের দিয়ে আমাকে বের করে দিতে বলেন চেয়ারম্যান। আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং খুবই দুর্ব্যবহার করেন তিনি। সম্প্রতি আমি ‘শিক্ষাবোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান নিয়ে গুঞ্জন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করি। ওই সংবাদের একটি অংশে উল্লেখ ছিল– বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সচিব থাকাকালীন ওএমআর শিট সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান থেকে হাতে হাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ১২ জুন আমি একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিলাম। এসব নিয়ে তিনি আমার ওপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি।
রিমা বলেন, সম্প্রতি করা সংবাদে সেই অভিযোগের অংশ টানায় তিনি আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পেশাগত কাজে গিয়ে এভাবে লাঞ্ছনার শিকার হতে হবে ভাবিনি। শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তার এমন আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হুমকি বলে মনে করছি। অবিলম্বে তিনি এ ঘটনার জন্য ক্ষমা না চাইলে আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিমের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a Reply